শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:
কতদূর এগোলো মানুষ! /কিন্তু আমি ঘোরলাগা বর্ষণের মাঝে আজও উবু হয়ে আছি। /ক্ষীরের মতন গাঢ় মাটির নরমে কোমল ধানের চারা রুয়ে দিতে গিয়ে ভাবলাম, এ মৃত্তিকা প্রিয়তমা কিষাণী আমার। (‘প্রকৃতি’, সোনালি কাবিন)
আজ ‘সোনালি কাবিন’ খ্যাত কবি আল মাহমুদের ৮৭তম জন্মদিন। বাংলা কবিতার অনন্য কণ্ঠস্বর কবি আল মাহমুদের জন্ম ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। বাবা মীর আবদুর রব। মা রওশন আরা মীর। স্ত্রী সৈয়দা নাদিরা বেগম। পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ের জনক তিনি। কবিতা লিখে পেয়েছেন মানুষের ভালোবাসা, প্রভূত খ্যাতি ও সম্মাননা।
আধুনিক কবিতায় লোকজ উপাদান ছড়িয়ে দেওয়া কবি আল মাহমুদ পঞ্চাশের দশকের কবিতার অন্যতম প্রধান পুরুষ। তিরিশের আধুনিক কবিরা যখন পাশ্চাত্যের প্রভাবে নাগরিক, নৈর্ব্যক্তিক ও খানিক নিরাশাবাদিতার দ্বারা প্রভাবিত আল মাহমুদ তখন দেশজাত, মানবিকতা, সাম্যবাদ ও এতে লগ্ন থাকার আকুতি জানিয়েছিলেন কবিতায়। বাংলার পাঠক সাদরে গ্রহণ করেছিলেন।
আল মাহমুদের কাব্যগ্রন্থ ‘সোনালী কাবিন’ সমকালীন বাংলা কবিতার একটি বাঁকের নাম। বলা হয়ে থাকে, তিনি যদি শুধু এই একটিমাত্র কাব্যগ্রন্থ রেখে যেতেন, তাতেও বাংলা কবিতার রাজ্যের অধীশ্বর হয়ে থাকতেন। কবি হিসেবে পরিচিত হলেও আল মাহমুদ একাধারে ছিলেন ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্পকার, শিশুসাহিত্যিক ও সাংবাদিক।
২০১৯ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি আমাদের ছেড়ে চলে যান। তিনি নেই কিন্তু বাংলা সাহিত্যে কবি আল মাহমুদের অবস্থান চিরস্থায়ী হয়ে রয়েছে কাব্যে, সাহিত্যে। কবিতায় আল মাহমুদ এমন এক স্বতন্ত্র অবস্থানে নিজেকে তুলে এনেছিলেন যেখানে তিনি নিঃসঙ্গ শেরপার মতোই বিরাজ করছেন। শুধু কবিতা নয়, অনন্য সব গল্প-গদ্যের অসাধারণ রূপকার আল মাহমুদ।